নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কার্জন হল থেকে হাইকোর্ট এলাকার রাস্তায় এই ঘটনা শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ১২টার দিকে দুই দলেরই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের অন্তত তিন শতাধিক নেতাকর্মী ধাওয়া দিলে ছাত্রদলের কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
ওই সময় হাইকোর্ট এলাকায় এক ছাত্রদল কর্মীকে একা মাটিতে ফেলে একদল ছাত্রলীগ কর্মী মারধর করে। হামলায় তিনি অবচেতন হয়ে পড়েন। সূত্র জানায়, পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিব হোসেনের সহযোগিতায় তাকে একটি রিকশাতে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালীন এক গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর করা হয়। ভুক্তভোগী আবির আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক। আবির বলেন, ‘আমি পেশাদারী দায়িত্ব পালন করতে ভিডিও করতে গেলে একদল আমাকে মারধর করে। তাদের আমি চিনতে পারিনি। তারা আমার মোবাইল কেড়ে নেয় এবং আমার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় দলবদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের অবস্থান ও মিছিল স্লোগান দিতে দেখা যাচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ছাত্রদলের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
গত ২২ মে টিএসসি এলাকায় ছাত্রদলের কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে মঙ্গলবার সকালে একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল ছাত্রদলের।
দলের নেতাকর্মীরা জানান, সংবাদ সম্মেলনের জন্য ঢাকা মেডিকেল হতে সাংবাদিক সমিতির দিকে যাচ্ছিলেন তারা। এসময় শহীদ মিনার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাফী ইসলাম বলেন, ‘আমরা আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের দেয়া বক্তব্যে পরিষ্কার করতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা ঢাকা মেডিকেল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ছাত্রলীগ আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের অন্তত ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে।
সংঘর্ষে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, ঢাবি শাখার যুগ্ম-আহবায়ক এজাজুল কবির জুয়েল, জগন্নাথ হলের সাবেক আহ্বায়ক ও ঢাবি শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব মজুমদার, আহ্বায়ক সদস্য মানসুরা আলমসহ ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবি করেন তিনি। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদল সংগঠনটি রাজাকারদের ডিস্ট্রিবিটর, সন্ত্রাসের ডিস্ট্রিবিটর। তারা সন্ত্রাসীবাদী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর মাঝে ভীতি ছড়াচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম থাকবে কিনা সেই আশংকা করছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াচ্ছে।’