নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: রাষ্ট্রীয় আইনে শুক্রবার সরকারি বন্ধ, শনিবার চালু থাকবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশব্যাপী এই আইনেই চলে সব প্রতিষ্ঠান। তবে এসবের তোয়াক্কা করেন না নলী জয়নগর কাদেরিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মো. আব্দুর রাজ্জাক।
একই সঙ্গে নারী নেতৃত্ব বিশ্বাস করেন না তিনি। ফলে অফিস কক্ষে নেই জাতির জনক ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এসব বিষয়ে আপত্তি জানানোয় মাদরাসার নিরাপত্তাকর্মীকে সুপারের কার্যালয়ে আটকে রেখে মারধর করেছেন সুপার ও তার সহযোগী শিক্ষকরা।
গতকাল বুধবার (১৮ মে) বেলা ১১টার দিকে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড নলী জয়নগরে এ ঘটনা ঘটে। আহত নিরাপত্তাকর্মীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. রুহুল আমিন বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শুক্রবার ক্লাশ চালু রাখা আর ব্যক্তিস্বার্থে শনিবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা সরাসরি আইনবিরোধী কাজ।
এ ধরনের কাজ কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এসব বিষয়ে আপত্তি জানালে কাউকে আটকে রেখে মারধর করা যথারীতি মারাত্মক অপরাধ। আমি খোঁজ নিচ্ছি, নলী জয়নগর মাদরাসায় এমন ঘটনা ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
মারধরের শিকার নিরাপত্তাকর্মী শহিদুল ইসলাম বলেন, এক ছাত্রীর অভিভাবক মাদরাসা নিয়ে ওঠা একটি অভিযোগের বিষয়ে বলেছিলেন। এছাড়া মাদরাসার আইসিটি শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলাবলি হচ্ছিল। এ এলাকার মানুষ যা বলে সেগুলো আমি মাদরাসার ভালোর জন্য সুপারকে বলি।
বুধবার সকালে তিনি আমাকে বলেন, কারা এসব বলে তাদের সামনে নিয়ে আয়। আমি সুপারের সামনে কয়েকজনকে নিয়ে আসি। তখন তিনি কিছুই বলেননি। সবাই চলে যাওয়ার পর আমাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে তার কক্ষে আটকে রেখে আইসিটি শিক্ষক মিরাজ, এবতেদায়ী প্রধান আবু সালেহসহ চার-পাঁচজন মিলে মারধর করেন।
এছাড়া শ্রেণিকক্ষ থেকে ছাত্রদের ডেকে এনেও আমাকে মারধর করান। এরপর অনেকক্ষণ সুপারের কক্ষে আটকে রাখেন। পরে গ্রামবাসী আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।