নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে মক্কা-মদিনা জেনারেল হাসপাতালে দালালের মাধ্যমে রোগী এনে ভুল চিকিৎসায় আতিকা (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল থেকে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মক্কা মদিনা হাসপাতালের মালিক নূরনবী ও আবুল হোসেনসহ এখন চারজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
বুধবার(১৮ মে) বিকালে মৃত শিশু আতিকার বাবা আজিম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. দেওয়ান মো. আনিসুর রহমান, ডা. এ কে এম নিজামুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তাকিম বিল্লাহ মারুফ ও নার্স মুক্তা ভৌমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতালের মালিক মো. নুরনবী, আবুল হোসেন, নাসের ও দালাল শাহজাহান এখনও পলাতক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. মুজিব পাটোয়ারী বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা (মামলা নং-১০৫) দায়ের করেছেন আতিকার বাবা আজিম। ঘটনার পর ডাক্তার ও নার্সসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতালের মালিক মো. নুরনবী, আবুল হোসেন, নাসের ও দালাল শাহজাহান পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছিলাম। শিশু আতিকার বাবা আজিম বলেন, রমজান মাসের প্রথম দিন দোলনা থেকে পড়ে গিয়ে ঊরুর হাড় ভেঙে যায় আতিকার।
এরপর আমরা বিভিন্ন কবিরাজি চিকিৎসা করি কিন্তু তাতে আমার মেয়ে ভালো না হওয়ায় পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর দালাল শাহজাহান ও সাব্বিরের মাধ্যমে মক্কা-মদিনা জেনারেল হাসপাতালে গতকাল মেয়েকে ভর্তি করি। হাসপাতালের মালিক নুর নবীর সঙ্গে বসে অপারেশনের বিষয়ে কথা বলি।
হাড় জোড়া লাগানোর জন্য রাতে অপারেশন করা হয়। অপারেশন করার পর আমার মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি। কিন্তু তারা আমাদের বিষয়টি জানায়নি।এরপর আমার স্ত্রী সকালে দেখে আতিকার মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। এরপর থানায় খবর দিলে পুলিশ হাসপাতালে আসে। এসে চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগে মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতালের মালিকসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি অভিযোগের বিষয়ে জানতে মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতালের মালিক নূর নবী ও আবুল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, এর আগে মক্কা-মদিনা জেনারেল হাসপাতাল সিলগালা করেছিল র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অপকর্মের জন্য মালিক নূরনবীকে কয়েকবার সাজাও দেওয়া হয়। জামিনে বের হয়ে আবারও একই ধরনের অপকর্ম শুরু করেন তিনি।