নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: নিজের জমিতে চাষ করা ১৬ কেজি কচুর লতি নিয়ে হাটে বসে বিক্রি করছিলেন বরিশাল ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স। স্থানীয় এক ব্যক্তি শনিবার (১৪ মে) ঘটনাটি তুলে ধরে ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। এতে মুহূর্তেই বিষয়টি ভাইরাল হয়। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বাবুলের বাজারের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স বরিশালের ঝালকাঠির রাজাপুরের বাসিন্দা। তার বাবা ছিলেন একজন সেনা কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারসহ ঢাকায় আর্মি কলোনিতে থাকতেন তিনি।
২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ২০০৮ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে কৃষি ব্যবসায় এমবিএ (মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ডিগ্রি নেন। এরপর ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে এমফিল এবং ২০১৮ সালে ঢাবি থেকে পিএইচডিও করেন তিনি।
তবে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের হাতিলেইট গ্রামে তার শ্বশুরবাড়ি। এ সুবাধে গত আট বছর ধরে তিনি কৃষিকে ভালোবেসে এ গ্রামেই বাণিজ্যিকভাবে আট একর জমিতে ‘কৃষাণ সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’ নামে গড়ে তুলছেন বিশাল কৃষি খামার।
ওই খামারে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন, লিচু, লটকন, আম ও মাল্টা চাষ করছেন। সেই সঙ্গে প্রায় ৩৫ রকমের কৃষি পণ্য ওই খামারে তিনি উৎপাদন করে নিজে খাওয়ার পাশাপাশি বিক্রি করছেন স্থানীয় হাটে।
রোববার (১৫ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্সের। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমানে আমার কৃষি খামারে ১১ জন স্থায়ী শ্রমিক কাজ করছেন। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই প্রয়োজন মতো শ্রমিক কাজ করেন আমার খামারে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরে ছয় মাস ছুটি নিয়ে তিনি খামারে কাজ করছেন জানিয়েছে আরও বলেন, আমি কৃষি ভালোবাসি। কৃষি নিয়ে স্বপ্ন দেখি। চাই সবাই কম-বেশি কৃষিকাজে সম্পৃক্ত হোক। কারণ বেঁচে থাকতে হলে সবাইকে কৃষি কাজ করতে হবে।
কৃষি প্রেমী ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স বলেন, গত শনিবার আমার নিজের উৎপাদিত ১৬ কেজি কচুর লতি নিয়ে হাটে গিয়েছিলাম। তখন কোনো একজন এ ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে ব্যতিক্রম তুলে ধরে। ফলে বিষয়টি নিয়ে এখন সবাই আলোচনা করছে।
মূলত এটা স্বাভাবিক বিষয়। তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক হওয়ায় হয়তো সবাই ভাবছেন এটা ব্যতিক্রম। কিন্তু আমি বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করি।